রচনা : বিজ্ঞান ও কুসংস্কার
📝 রচনা: বিজ্ঞান ও কুসংস্কার
🔖 (Science and Superstition)
📚 উক্তি: “অন্ধবিশ্বাস হলো অজ্ঞানতার সন্তান, আর বিজ্ঞান হলো জ্ঞানের আলো।
ভূমিকা :
আজকের যুগ বিজ্ঞানের যুগ। মানুষ চাঁদের বুকে পা রেখেছে, মহাকাশে রকেট পাঠাচ্ছে, হাতে হাতে স্মার্টফোন ঘোরে।
তবুও, আজও সমাজের নানা প্রান্তে কুসংস্কার মানুষকে পেছনে টেনে রাখছে।
এ যেন একদিকে আলো, আরেকদিকে অন্ধকার।
বিজ্ঞান কী?:
বিজ্ঞান অর্থ— যুক্তি, পর্যবেক্ষণ ও প্রমাণের মাধ্যমে সত্য জানা।
বিজ্ঞান সব কিছুকে পরীক্ষা করে দেখে, কারণ খোঁজে এবং ফলাফল বিশ্লেষণ করে।
আমাদের প্রতিদিনের জীবনেই বিজ্ঞান রয়েছে— মোবাইল, ইন্টারনেট, গ্যাস, বিদ্যুৎ — সবই বিজ্ঞানের দান।
---
কুসংস্কার কী? :
কুসংস্কার মানে এমন বিশ্বাস, যার পেছনে কোনো যুক্তি বা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
যেমন — বিড়াল রাস্তা কাটলে অমঙ্গল, eclipses-এ খাবার খাওয়া নিষেধ, জুতার মুখ উল্টো থাকলে অশুভ।
এই সব ধারণা মানুষের অশিক্ষা, ভয় ও কল্পনার ফল।
---
কুসংস্কার জন্মায় কেন? :
যেখানে শিক্ষার অভাব থাকে, যুক্তি ও বিশ্লেষণের অভাব থাকে— সেখানেই কুসংস্কার জন্ম নেয়।
অজানার প্রতি ভয়, সমাজের পুরনো প্রথা ও ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যা এই কুসংস্কারকে লালন করে।
বিজ্ঞানের চোখে কুসংস্কার :
বিজ্ঞান কখনো অন্ধভাবে কিছু বিশ্বাস করে না।
যে বিশ্বাস প্রমাণের মাধ্যমে সত্য প্রমাণ হয় না, তা বিজ্ঞান মানে না।
যেমন, বিজ্ঞান দেখিয়ে দিয়েছে যে— সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণে খাবার খারাপ হয় না, গর্ভবতী নারীর পূর্ণিমায় বাইরে যাওয়া ক্ষতিকর নয়।
কুসংস্কারের ক্ষতি :
একটি কুসংস্কার অনেক সময় সমাজে বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়।
• গর্ভবতী নারীদের অবহেলা,
• ছোট শিশুদের ভুল চিকিৎসা,
• নারীদের উপর ডাইনী অপবাদ,
• ভয় দেখিয়ে অর্থ নেওয়া —
এসবই কুসংস্কারের ভয়াবহ রূপ।
কুসংস্কার দূর করতে কী করণীয়?
• মানুষের মধ্যে শিক্ষা ও সচেতনতা বাড়ানো
• স্কুল-কলেজে বিজ্ঞান-ভিত্তিক আলোচনা, প্রদর্শনী
• ধর্ম ও বিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য পরিষ্কার করা
• শিশুদের ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানমুখী শিক্ষা দেওয়া
উপসংহার :
বিজ্ঞান আমাদের আলো দেখায়, কুসংস্কার মানুষকে পিছিয়ে দেয়।
তাই সমাজের প্রতিটি মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক হতে হবে, অন্ধবিশ্বাস নয়— যুক্তিকে গ্রহণ করতে হবে।
তবেই আমরা একটি আধুনিক, উন্নত ও যুক্তিবাদী সমাজ গড়তে পারব।
Comments
Post a Comment